SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - সবাই কাছাকাছি | NCTB BOOK

১৩.১.১ যোগাযোগ কী?
‘যোগাযোগ” শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। প্রতিদিন আমরা হাজার রকম যোগাযোগ করছি। যেমন সড়কপথের যোগাযোগ, নৌপথে যোগাযোগ কিংবা আকাশ পথে যোগাযোগ। এসব বলতে বোঝায় গাড়ি, রেল, নৌকা, স্টিমার ও বিমানকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করে এক জায়গা থেকে অন্য যায়গায় যাওয়া বা কোনো মালপত্র পৌঁছে দেয়া। আজকে আমরা একটু ভিন্ন ধরনের যোগাযোগের কথা বলব। এর নাম তথ্য যোগাযোগ। ভোর বেলা যখন তোমার ঘড়ির অ্যালার্ম বাজে এবং তুমি ঘুম থেকে উঠ, সেটি হচ্ছে ঘড়ির সাথে তোমার যোগাযোগ। টেলিভিশনে বা রেডিওতে খবর শুনছ বা কোনো অনুষ্ঠান দেখছ বা শুনছ—এটাও এক ধরণের যোগাযোগ। টেলিফোনে কোনো ট্যাক্সি ক্যাবকে তোমার বাসায় ডাকলে সেটিও যোগাযোগ। এই যে লেখাটা তুমি পড়ছ বা ক্লাসে তোমার শিক্ষকের কথা শুনছ, তাঁকে প্রশ্ন করছ, তাঁর প্রশ্নের জবাব দিচ্ছ— এগুলো সবই কোনো না কোনো ধরনের যোগাযোগ। সুতরাং যোগাযোগ হলো, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে বা এক যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে কথা-বার্তা, চিন্তাভাবনা বা তথ্যের আদান-প্রদান বা বিনিময় করা।
 

১৩.১.২ যোগাযোগের মৌলিক নীতিমালা

  • যোগাযোগের জন্য অবশ্যই প্রেরক এবং গ্রাহক থাকতে হবে। প্রেরক আর গ্রাহক ছাড়া যোগাযোগ হয় না। যোগাযোগের জন্য প্রেরক ও গ্রাহকের পরস্পরের প্রতি আস্থা থাকবে, থাকবে আগ্রহ এবং গ্রহণযোগ্যতা।
  •  যোগাযোগের ভাষা হতে হবে সহজ, সরল, সুস্পষ্ট এবং সম্পূর্ণ। যোগাযোগ আসলে একটি আর্ট বা কলা। এর তথ্য বা সংকেত বা ভাষা হবে প্রেরক ও গ্রাহকের নিকট বোধগম্য এবং সুস্পষ্ট  সঠিক তথ্য পাঠাতে হবে সঠিক ব্যক্তির কাছে।
  • যোগাযোগের ভাষা, কথা বা বার্তার মধ্যে অবশ্যই সৌজন্যবোধ থাকবে।
     

১৩.১.৩ যোগাযোগের প্রক্রিয়া ও এর ধাপ
যোগাযোগের জন্য প্রেরক বার্তাকে কোনো এক ধরনের সংকেতে রূপ দিয়ে সেটি কোনো মাধ্যম দিয়ে প্রেরণ করে। গ্রাহক সংকেতরূপী বার্তা গ্রহণ করে এর অর্থ উদ্ধার করে এবং প্রয়োজন হলে সাড়া প্রদান করে বা উত্তর দেয় (চিত্র ১৩.০১)। এ সাড়া বা উত্তরকে পাঠানো হয় প্রেরকের কাছে, এ কাজটিকে বলা হয় ফিডব্যাক। এভাবে যোগাযোগ প্রক্রিয়া চলতে থাক যেকোনো ইলেকট্রনিক যোগাযোগব্যবস্থায় থাকে একটি প্রেরক যন্ত্র, একটি যোগাযোগমাধ্যম এবং একটি গ্রাহকযন্ত্র। অধিকাংশ যোগাযোগব্যবস্থার মেসেজ বা বার্তাটি তৈরি করে কোনো ব্যক্তি। পরে তা প্রেরকযন্ত্রের সাহায্যে যোগাযোগ মাধ্যম দিয়ে প্রেরণ করা হয়। গ্রাহকযর এ বার্তা গ্রহণ করে অপর কোনো ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয়। এগুলোই হলো যোগাযোগের ধাপ ।
 

১৩.১.৪ যোগাযোগের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
যোগাযোগ হলো তথ্য আদান-প্রদানের মূল প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে মানুষ তার চিন্তা, ধারণা, অনুভব একে অন্যের কাছে প্রকাশ করে বা পৌঁছে দেয়। মানব সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানুষ একে অন্যের সাথে নানাভাবে যোগাযোগ করছে। এখন আমরা মুহূর্তের মধ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট,  ফ্যাক্স ও ই-মেইলের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগযোগ করতে পারি।কোনো সমস্যা সমাধান বা সম্পর্কের উন্নতি নির্ভর করে সার্থক এবং কার্যকর যোগাযোগের উপর। পড়ালেখা, গবেষণা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি, পরিবহন ব্যবস্থাপনা, অপরাধী ধরা, অপরাধ দমন ইত্যাদি সব কাজ সার্থকভাবে ও দ্রুত সম্পাদন করা যায় উন্নত যোগাযোগের মাধ্যমে। তথ্য বিনিময়, কোনো পরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়ন, কোনো যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদান করে মানুষকে প্রভাবিত করা ইত্যাদি সব কাজই যোগাযোগের দ্বারা করা সম্ভব। ইলেকট্রনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের দিন দিন পৌঁছে দিচ্ছে উন্নতির শিখরে। প্রতিদিনই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। তাই এ যুগকে বলা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ।

 


 

Content added || updated By